আওয়ামী লীগের নেতারা সভায় এলে ‘চোর-বাটপাড়দের ছবি তুলবেন না’ বলে জানান ওই সাংবাদিক।
পর্তুগালে আওয়ামী লীগ নেতাকে ‘চোর-বাটপাড়’ বলায় এক প্রবাসী সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।
১৯ জুন রাতে লিসবনের লার্গ দা ইনতেন্দেন্তে বাংলাদেশি কমিউনিটির এক সংবর্ধনা সভায় ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগকারী রনি মোহাম্মদ পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমে পর্তুগাল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন তিনি।
রনি অভিযোগ করে বলেন, “প্রায় ২ মাস ধরে একটি সংঘবদ্ধ দল তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে ওইদিন আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ধারী কয়েকজন এই হামলা চালায়।”
শুক্রবার লিসবনে ইসমাইল হোসেন জুয়েল, জাবেদ মাহমুদ ও আরিজ আলী নামে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন রনি।
জুয়েল পর্তুগাল আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সহ সম্পাদক। অপর দুই অভিযুক্ত জাবেদ মাহমুদ ও আরিজ আলী নিজেদের আওয়ামী লীগের ‘পদধারী নেতা’ বলে পরিচয় দেন।
‘হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা’ করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করেন রনি। এতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তিনি তার জীবনের নিরাপত্তা ও বিচার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পর্তুগাল আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সহ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন জুয়েলের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
মামলার বিষয়ে ‘কিছু জানেন না’ বলে জানান জুয়েল। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “ওইদিন সংবর্ধনা সভায় অতিথিদের ছবি তুলছিলেন সাংবাদিক রনি মোহাম্মদ। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতারা এলে ‘চোর-বাটপাড়দের’ ছবি তুলবেন না বলে জানান তিনি। এতে সামান্য কথা কাটাকাটি হলেও কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।”
এদিকে এ ঘটনায় পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলো নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি রাসেল আহম্মেদ বলেন, “ব্যক্তিগত আক্রোশে সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ বানানো হচ্ছে। একই ব্যক্তিরা প্রেস ক্লাবের ইফতার পার্টিতে গিয়ে গন্ডগোল করেছিলেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
পর্তুগালে বাংলাদেশি উদ্যোক্তা মাসুম আহমেদ বলেন, “আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের প্রশ্রয় পেয়ে তারা এ হামলা করার দুঃসাহস করেছে। পর্তুগাল আওয়ামী লীগের এমনও নেতা রয়েছেন যাদের নামে এই দেশে একাধিক মামলা রয়েছে।”
এ বিষয়ে সর্ব ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগের কেউ যদি কোনো ধরনের হামলায় জড়িত থাকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পর্তুগাল সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন আসাদ বলেন, “আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি, দলমত মিলে একসঙ্গে থাকতে চাই। কিন্তু কিছু দুষ্টু মানুষের জন্য বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।”